ইলোন মাস্কের এক্স প্ল্যাটফর্মে এখন গ্রোক নামে একটি এআই চ্যাটবট ঘুরে বেড়াচ্ছে, যাকে ফ্যাক্ট-চেকিং টুল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মাসের শুরুতে এক্স ব্যবহারকারীরা গ্রোকের কাছে নানা প্রশ্ন করার সুযোগ পেয়েছে। রাজনীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন টপিকে তথ্য যাচাইয়ের জন্য লোকজন এর দ্বারস্থ হচ্ছে। কিন্তু এই গ্রোক কি সত্যিই ভরসার যোগ্য? নাকি এর পিছনে লুকিয়ে আছে ভুল তথ্য ছড়ানোর ঝুঁকি?
ফ্যাক্ট-চেকাররা বলছেন, গ্রোকের উত্তরগুলো দেখতে স্মার্ট লাগলেও সবসময় সঠিক হবে—এমন কোনো গ্যারান্টি নেই। আগেও এই চ্যাটবট ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। গত বছর মার্কিন নির্বাচনের আগে গ্রোকের বিভ্রান্তিকর তথ্য নিয়ে হইচই হয়েছিল। এমনকি পাঁচজন স্টেট সেক্রেটারি ইলোন মাস্ককে এর কার্যক্রম ঠিক করার জন্য চিঠি পর্যন্ত লিখেছিলেন। আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্কের (আইএফসিএন) পরিচালক অ্যাঞ্জি হোলানের মতে, “এআই যতই ফ্লুয়েন্টলি কথা বলুক, তথ্য যাচাইয়ে মানুষের মতো নির্ভরযোগ্য উৎস ব্যবহার করার ক্ষমতা এখনো ওদের নেই।”
সম্প্রতি গ্রোকের একটি অটোমেটেড অ্যাকাউন্ট এক্সে স্বীকার করেছে যে এটা ভুল তথ্য ছড়াতে পারে, এমনকি গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঝুঁকিও আছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, এক্সে ব্যবহারকারীদের জন্য কোনো সতর্কতা দেখানো হয় না। ফলে অনেকে না বুঝে এর উত্তরকে সত্যি ভেবে ফেলতে পারে।
গোয়ার ডিজিটাল ফিউচারস ল্যাবের গবেষক অনুষ্কা জৈন বলছেন, “গ্রোক কীভাবে তথ্য যাচাই করে বা এটা এক্সের পোস্টগুলোকে ট্রেনিং ডাটা হিসেবে ব্যবহার করে কি না—এসব নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা আছে।” আর যদি এক্সের পোস্টই এর জ্ঞানের উৎস হয়, তাহলে তো গুজব আর ভুল তথ্য ছড়ানোর সম্ভাবনা আরো বেড়ে যায়।
ফ্যাক্ট-চেকাররা মনে করেন, এআই যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য দেয়, তখন তার প্রভাব ব্যক্তিগত ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি। হোলান বলছেন, “এআই মডেলগুলো ২০% পর্যন্ত ভুল করতে পারে, আর এই ভুলগুলো মাঝে মাঝে বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।” এক্স আর গ্রোকের মেকার এক্সএআই এখনো এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
তো, গ্রোকের এই ফ্যাক্ট-চেকিং যাত্রা কতটা সফল হবে? এটা কি সত্যিই আমাদের তথ্য যাচাইয়ে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিভ্রান্তি ছড়াবে? আপনার কী মনে হয়? নিচে কমেন্টে জানান!
0 মন্তব্যসমূহ